জৈব রসানের সূচনা

 

জৈব রসানের সূচনা

---

• কার্বন শিকল দ্বারা গঠিত বিভিন্ন যৌগের রসায়নকে জৈব রসায়ন বলা হয়

• ফ্রেডরিক ভোলার অ্যামোনিয়াম সায়ানেটকে উত্তপ্ত করে ইউরিয়া প্রস্তুত করেন

• NH₄CNO  H₂N.CO.NH₂

• পৃথিবীতে অজৈব যৌগের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষের মত

• জৈব যৌগসমূহ প্রধানত সমযোজী

• ১৯১৬ সালে বিজ্ঞানী লুইস সমযোজী বন্ধনের ইলেক্ট্রনীয় মতবাদ প্রকাশ করেন

• মিথেন অণুতে H-C-H প্রতিটি বন্ধন কোণের পরিমাপ সমান এবং তা 109ᵒ28́

• সমাণুতাকে প্রধানত ২ শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়-

  • ১. গাঠনিক সমাণুতা

  • ২. স্টেরিও বা ত্রিমাত্রিক সমাণুতা

• সমযোজী সিগমা বন্ধনের সুষম-ভাঙনের উৎপন্ন ফলে বিজোড় ইলেক্ট্রনযুক্ত পরমাণু বা মূলককে মুক্ত মূলক বা ফ্রি-রেডিক্যাল বলে

• ফ্রি-রেডিক্যালগুলো সক্রিয় ও ক্ষণস্থায়ী

• ধনাত্মক চার্জযুক্ত কার্বন পরমাণু সম্বলিত জৈব আয়নকে ‘কার্বোনিয়াম’ আয়ন বলে

• স্টেরিও সমাণুর ত্রিমাত্রিক চিত্রকে কনফিগারেশন বলে

• নিকল প্রিজম ক্যালসাইট নামক এক বিশেষ খনিজ পদার্থ থেকে প্রস্তুত করা হয়

• ল্যাকটিক এসিডের অণুতে একটি অপ্রতিসম কার্বন বা কাইরাল কেন্দ্র থাকায় ল্যাকটিক এসিড একটি আলোক সক্রিয় যৌগ

• মিথানল এর স্ফুটনাংক- 64.5ᵒC

• প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া সাধারণ সিগমা বন্ধন যুক্ত জৈব যৌগের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বিক্রিয়া

• প্রত্যেক sp³ সংকর অরবিটালের 25% s-চরিত্র ও 75% p-চরিত্র থাকে

• প্রত্যেক sp² সংকর অরবিটালের 33.3% s-চরিত্র ও 66.7% p-চরিত্র থাকে

• প্রত্যেক sp সংকর অরবিটালের 50% s-চরিত্র ও 50% p-চরিত্র থাকে

 

• কার্বন পরমাণুর ব্যাসার্ধ 0.077nm [1nm = 10^‑9m]

• বর্তমানে জৈব যৌগের সংখ্যা ৮০ লক্ষেরও বেশি

• জৈব যৌগে অবশ্যই কার্বন থাকবে

• পিরিডিনের সংকেত- C₅H₅N

• কুইনোলিনের সংকেত- C₉H₇N

• জৈব রসায়নের জনক ফ্রেডরিক ভোলার

• কাইরাল কার্বনে ৪টি ভিন্ন পরমাণুর বা গ্রুপ ভিন্ন থাকে

• একই সমগোত্রীয় শ্রেণীর ক্ষেত্রে পাশাপাশি দুইটি সমগোত্রক এর মধ্যে মিথিলিন মূলকের (-CH₂-) পার্থক্য থাকে

• জৈব যৌগের গলনাংক ও স্ফুটনাংক খুবই কম

• জৈব যৌগের বিক্রিয়াসমূহ জটিল এবং ধীর গতিসম্পন্ন

• অ্যালকিনকে অ্যালকা-ডাই-ইন বা ডাই-অ্যালকিন বলে

• ইথিলিন বায়ু অপেক্ষা সামান্য হালকা

• ইথিলিন অক্সি-ইথিলিন শিখা প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়

• বর্তমানে ইথারের পরিবর্তে ইথিলিন চেতনানাশক রূপে প্রচুর ব্যবহৃত হয়

• কৃত্তিম উপায়ে কাঁচা ফল পাকাতে ইথিলিন ব্যবহৃত হয়

• ইথিলিনে sp² সংকরণ বিদ্যমান

• অ্যাসিটিলিনকে ডাই-অ্যালকাইনও বলে

• অ্যাসিটিলিন বায়ু অপেক্ষা সামান্য হালকা

• অ্যালকোহল ও অ্যাসিটোনে অ্যাসিটিলিন যথাক্রমে 1 ও 25 আয়তনে দ্রবীভূত হয়

• লৌহ সিলিন্ডারে উচ্চ চাপে অ্যাসিটিলিনকে অ্যাসিটোনে দ্রবীভূত করে স্থানান্তরিত করা হয়

• তরল অ্যাসিটিলিন বিস্ফোরণ ঘটায়

• SiO₂-কে কাইজেল গুড় বলে

• অক্সি-অ্যাসিটিলিন শিখার তাপমাত্রা 3500ᵒC

• কপার-অ্যাসিটিলাইডের বর্ণ লাল

• সিলভার-অ্যাসিটিলাইডের বর্ণ সাদা

• অ্যাসিটিলিন একটি অম্লধর্মী যৌগ

• অ্যালকোহলের সংকেত- C_nH_2n+2

• অ্যালকিনের সংকেত- C_nH_2n

• অ্যালকাইনের সংকেত- C_nH_2n-2

• কার্বোনিয়াম আয়নসমূহের স্থায়িত্বক্রম- ⁺Cr₃ ˃ ⁺CHR₂ ˃ ⁺CH₂R ˃ ⁺CH₃

• কার্বানায়নের স্থায়িত্বক্রম- ^-CH₃ ˃ ^-CH₂R ˃ ^-CHR₂ ˃ ⁺Cr₃

• ধনাত্মক ইলেকট্রোফাইল- R^+, Br⁺, H⁺, NO₂⁺ ইত্যাদি

• প্রশম ইলেকট্রোফাইল- AlCl₃, BF₃, FeCl₃ ইত্যাদি

• ঋণাত্মক নিউক্লিওফাইল- CN^-, Cl^-, OH^- ইত্যাদি

• প্রশম নিউক্লিওফাইল- NH₃, H₂O, R-OH ইত্যাদি

 

 

5. বিভিন্ন যৌগে পরমাণুর বন্ধন প্রকৃতি ও বন্ধন দৈর্ঘ্য :

বন্ধন	অরবিটাল সংকরন	চরিত্র	বন্ধন প্রকৃতি	বন্ধন দৈর্ঘ্য (nm)	বন্ধন প্রকৃতি	বন্ধন দৈর্ঘ্য
ইথেন	sp	25	C-C	0.154	C-H	0.121
ইথিন	sp	33.3	C=C	0.134	C-H	0.110
ইথেন	sp	50	C≡C	0.120	C-H	0.106

 

 

5. বিভিন্ন যৌগে পরমাণুর বন্ধন ও বন্ধন শক্তি :

যৌগ	বন্ধন দৈর্ঘ্য
	Å	nm
C-C	1.54	0.154
C=C	1.34	0.134
C≡C	1.20	0.124

 

 প্রোপাননের টটোমারিজম-

      O                           OH

                                      ∣

CH₃-C-CH₃₌CH₃-C=CH₂

 

 

5. IUPAC পদ্ধতিতে নামকরণ :

-CHO	ন্যাল বা নাল
-OH	অল
-CO	ওন
-COOH  ∣	অয়িক এসিড
-C=C-  ∣	ইন
-C≡C-  ∣	আইন
-NH2  ∣	1ᵒ অ্যামিন
-NH	2ᵒ অ্যামিন
-N	3ᵒ অ্যামিন

 

 

5. সিগমা বন্ধন ও পাই বন্ধনের পার্থক্য :

সিগমা (σ) বন্ধন	পাই (π) বন্ধন
সিগমা বন্ধন গঠনে অরবিটালদ্বয় একই সরলরেখায় থাকে	পাই বন্ধন গঠনে অরবিটালদ্বয় সমান্তরাল অবস্থায় থাকে
অরবিটাল দ্বারা মুখোমুখি সর্বোচ্চ অভিলেপন বা অধিক্রমণে সৃষ্ট সিগমা বন্ধন দৃঢ় হয়	অরবিটালদ্বয়ের আংশিক পার্শ্ব অভিলেপন বা অধিক্রমণে সৃষ্ট পাই বন্ধন দুর্বল থাকে
সকল একক বন্ধন সিগমা বন্ধন দ্বারা গঠিত	সিগমা বন্ধন সৃষ্টির পর সম্ভব হলে ১টি ও ২টি পাই বন্ধন সৃষ্টির মাধ্যমে দ্বিবন্ধন ও ত্রিবন্ধন হয়
সিগমা বন্ধন যুক্ত পরমাণুদ্বয় তাদের অক্ষ বরাবর ঘুরতে পারে	পাই বন্ধন সৃষ্টির ফলে পরমাণুদ্বয় অক্ষ বরাবর ঘুরতে পারে না
সংকর অরবিটাল ও বিশুদ্ধ অরবিটাল উভয় ক্ষেত্রে সিগমা বন্ধন হতে পারে	s অরবিটাল ও সংকর অরবিটাল ছাড়া অন্য অরবিটালে পাই বন্ধন ঘটতে পারে

 

 

5. জৈব বিক্রিয়াসমূহ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী :

 

কৌশলগত দিক, বিক্রিয়ার ধারা ও উৎপন্ন বস্তুর প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে জৈব বিক্রিয়াকে ৪ শ্রেণীতে ভাগ করা যায়-

১. প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া : যে বিক্রিয়ায় কোন জৈব যৌগ হতে এক বা একাধিক পরমাণু বা মূলক প্রতিস্থাপিত হয়ে সে স্থানে অধিকতর সক্রিয় কোন পরমাণু বা মূলক স্থাপিত হয় তাকে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া বলে। যেমন-

CH₃Cl+KOH[জলীয়]→CH₃OH+KCl

এখানে –OH মূলক দ্বারা হ্যালাইড মূলক প্রতিস্থাপিত হয়েছে

 

২. যুত বা সংযোজন বিক্রিয়া : যে বিক্রিয়ায় দুটি পদার্থের সরাসরি বা প্রত্যক্ষ সংযোগে একটি নতুন যৌগ গঠিত হয় তাকে যুত বিক্রিয়া বলে। এটি বন্ধনযুক্ত যৌগের বৈশিষ্ট্যমূলক বিক্রিয়া। যেমন-

H₂C=CH₂+Br₂→H₂C-CH₂

                        ∣   ∣

                       Br  Br

অসম্পৃক্ত জৈব যৌগে এ বিক্রিয়ায় একটি বন্ধন ভেঙ্গে দুটি বন্ধন সৃষ্টি হয়

 

৩. অপসারণ বিক্রিয়া : যে বিক্রিয়ায় কোন যৌগের অণুস্থ পাশাপাশি দুটি বা চারটি পরমাণু বা মূলক অপসারিত হয়ে অসম্পৃক্ততার সৃষ্টি হয় তাকে অপসারণ বিক্রিয়া বলে। যেমন-

CH₃-CH₂-CH₂+KOH[alc]→CH₃-CH=CH₂+H₂O+KCl

            ∣

           Cl

 

৪. সমাণুকরণ বিক্রিয়া : যে বিক্রিয়ায় কোন যৌগের অণুস্থ পরমাণুগুলো বা মূলকগুলো পুনর্বিন্যস্ত হয়ে একই আণবিক সংকেতবিশিষ্ট নতুন যৌগ তথা মূল যৌগের সমাণু উৎপন্ন করে তাকে পুনর্বিন্যাস বা সমাণুকরণ বিক্রিয়া বলে।

NH₄CNO => NH₂-CO-NH₂

অ্যামোনিয়াম সায়ানেট  ইউরিয়া 

 

ফ্রি র‌্যাডিক্যাল : বিজোড় ইলেক্ট্রন সংবলিত যে কোন প্রজাতিকে মুক্ত পরমাণুজোট বা ফ্রি র‌্যাডিকেল বলে।

বৈশিষ্ট্য :

১. এরা অত্যন্ত সক্রিয় ও ক্ষণস্থায়ী

২. এরা আয়নিক প্রকৃতির নয়

৩. এরা অন্য 

ইলেক্ট্রনের সাথে যুক্ত হয়ে সুস্থিত পরমাণু বা গ্রুপ গঠন করতে চায়

 

 

• কার্বনের ক্যাটেনেশন : কোন মৌলের পরমাণুসমূহ নিজেদের মধ্যে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন আকার ও আকৃতির দীর্ঘশিকল গঠন করার ধর্মকে ক্যাটেনেশন বলে। ল্যাটিন catena এর অর্থ শিকল। ক্যাটেনেশনের বিশেষ উদাহরণ হল ফুলারিন। ফুলারিন নামক দীর্ঘ শিকলের (C₆₀) জৈব যৌগটির আনবিক ভর । এ কাঠামোতে পরমাণুসমূহ সংকরিত থাকে।

 

 

• কার্বনের চতুর্যজ্যতা : কার্বনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কার্বন চতুযোজী।

 

C(6) = 1s² 2s² 2p¹_x 2p¹_y 2p⁰_z

C*(6) = 1s² 2s¹ 2p¹_x 2p¹_y 2p¹_z

সাধারণ অবস্থায়, কার্বনের 2p_x 2p_y অরবিটালে দুটি বিজোড় e^- আছে এবং 2p_x খালি। তাই কার্বনের দ্বিযোজী হওয়া উচিত কিন্তু কার্বন চতুযোজী। কারণ উত্তেজিত অবস্থায় কার্বন পরমাণুর বহিঃস্তরের 2s উপস্তরের e^- যুগল ভেঙ্গে একটি e^- ফাঁকা 2p_z অরবিটালে উন্নীত হয় এবং সংকরীকরণের মাধ্যমে চারটি নতুন সমতুল অরবিটাল গঠন করে।

 

 

5. কতিপয় যৌগের কাযকরীমূলক :

সমগোত্রীয় শ্রেণী	কাযকরীমূলকের নাম	সংকেত
অ্যালকেন
অ্যালকিন	অ্যালকেন মূলক (একক বন্ধন)	-C=C-  ∣     ∣
অ্যালকাইন	অ্যালকিন (দ্বিবন্ধন)	-C≡C-
অ্যালকাইল হ্যালাইড	অ্যালকাইনমূলক (ত্রিবন্ধন)	-R-X
অ্যালকোহল	হ্যালাইড মূলক	-OH
প্রাইমারি অ্যালকোহল	হাইড্রোক্সি মূলক	-CH2OH
সেকেন্ডারি অ্যালকোহল	অ্যালকোহলিক মূলক	-CHOH  ∣
টারশিয়ারি অ্যালকোহল	অ্যালকোহলিক মূলক	≡C-OH
অ্যালডিহাইড	অ্যালকোহলিক মূলক	-CHO
কিটোন	অ্যালডিহাইড মূলক	-CO-
কার্বক্সিলিক এসিড	কিটোন মূলক	-COOH
ইথার	কার্বক্সিল মূলক	≡C-O-C≡
অ্যালকাইল অ্যামিন	ইথার মূলক	-NH2
এসিড অ্যামাইড	অ্যামিনো মূলক	-CONH2
এসিড ক্লোরাইড	অ্যামাইডো মূলক	-COCl
এস্টার	এসিড ক্লোরাইড মূলক	-COOR
এসিড অ্যানহাইড্রাইড	এস্টারমূলক	-CO-O-CO-
অ্যালকাইল সায়ানাইড (নাইট্রাইল)	অ্যানহাইড্রাইডমূলক	-CN
নাইট্রো যৌগ	সায়ানো মূলক	-NO2
থাইওল	নাইট্রোমূলক	-SH
ফিনাইল/ অ্যারাইল	থাইওলমূলক	C6H5-
ফিনাইলিন	অ্যারাইল মূলক	-C6H4-
ন্যাপথাইল	ফিনাইলিনমূলক	C10H7-
বেনজাইল	ন্যাপথাইল মূলক	C6H5CH2-
বেনজাল	বেনজাইলমূলক	C6H5CH2=
রেনজো	বেনজোমূলক	C6H5CH2≡
সালফোনিক এসিড	সালফোনিক মূলক	-SO3H

 

 

5. কাযকরী মূলকসমূহের অগ্রগণ্য ক্রম :

সমগোত্রীয় শ্রেণীর নাম	কাযকরী মূলক
কার্বক্সিলিক এসিড	-COOH
সালফোনিক এসিড	-SO3H
এসিড হ্যালাইড	-COX
এসিড অ্যামাইড	-CONH2
নাইট্রাইল বা সায়ানাইড	-CN
অ্যালডিহাইড	-CHO
কিটোন	-CO-
অ্যালকোহল	-OH
থায়োল	-SH
অ্যামিন	-NH2
অ্যালকিন	-C=C-   ∣  ∣
অ্যালকাইন	-C≡C-
অ্যালকেন	∣  ∣ -C-C-    ∣  ∣
ইথার	-OR
হ্যালাইডস	-F, -Cl, -Br, -I
নাইট্রো যৌগ	-NO2
অ্যালকাইল মূলক	-R